বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম – How to create BKash Account

বিকাশ হলো বাংলাদেশের একটি সেরা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। বিকাশ একাউন্ট চালাতে হলে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জেনে একাউন্ট খোলা বাধ্যতামূলক।

আজকের এই আর্টিকেলের মূলত আলোচনা করা হবে, ঘরে বসে কিংবা এজেন্ট এর মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্য। যা অবশ্যই আপনার উপকার আসবে।

কিভাবে বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়?

আপনি চাইলে ভিন্ন দুটি উপায়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন, এর মধ্যে থেকে একটি হল ঘরে বসেই আর অন্যটি হলো বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে।

ঘরে বসে আপনি যদি বিকাশ একাউন্ট খোলার পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নেন, তাহলে কোন রকমের এজেন্টের সহায়তা ছাড়াই একটি বিকাশ একাউন্ট তৈরী করে নিতে পারবেন।

এছাড়াও আপনার হাতে যদি স্মার্ট ফোন না থাকে কিংবা আপনি যদি বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে একাউন্ট তৈরী করতে চান, তাহলে আপনি খুব সহজে এজেন্টের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিতে পারেন।

এই দুইটি উপায় একাউন্ট খোলার জন্য যে সমস্ত ডকুমেন্টস কিংবা অন্যান্য বিষয়াদি প্রয়োজন হবে সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে আলোচনা করা হলো।

ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম

আপনি যদি ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট তৈরী করতে চান, তা হলে প্রথমত আপনাকে যে ধাপ পাড়ি দিতে হবে সেটি হলোঃ বিকাশ এর অফিসিয়াল অ্যান্ড্রয়েড কিংবা আইফোনের জন্য এভেইলেবল অ্যাপস রয়েছে সেই অ্যাপস ডাউনলোড করে নিতে হবে।

নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে আপনি আপনার নির্দিষ্ট ডিভাইসের জন্য বিকাশ অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিন।

Download APP

 

আপনার নির্দিষ্ট ডিভাইসের জন্যও যখনই আপনি বিকাশ অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিবেন তখন এই অ্যাপসটিতে প্রবেশ করুন এবং তারপরে প্রবেশ করার পরে যে সমস্ত পারমিশন চায় সে সমস্ত পারমিশন এলাও করে দিন।

যখনই আপনি এপসটিতে প্রবেশ করবেন, তখন সমস্ত পারমিশন চাইবে সেগুলোকে Allow করে দেয়ার পরে সর্বশেষে লোকেশন এর পারমিশন চাইবে, আপনি চাইলে লোকেশন পারমিশন এলাও করে দিন তাহলেই এপসটিতে প্রবেশ করতে পারবেন।

প্রবেশ করার পরে আপনি চাইলে এখানে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন কিংবা এই অ্যাপটিতে ঘুরে দেখতে পারবেন।

যেহেতু আপনি একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান, সে জন্য লগ-ইন /রেজিস্ট্রেশন নামে যে বাটন রয়েছে তাতে ক্লিক করুন।

বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম | Bkash Account Registration

লগ-ইন রেজিস্ট্রেশন বাটন এ ক্লিক করার পরে যে নাম্বার দিয়ে আপনি বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান, সেই নাম্বারটি এখানে বসিয়ে দিন।

মনে রাখবেন, নাম্বারটি অবশ্যই আপনার ফোনে সংযুক্ত করা থাকতে হবে বা আপনার ফোনে নাম্বারটি এক্টিভেট করা থাকতে হবে।

অন্যতায় ভেরিফিকেশন কোড আসলেও বিকাশ একাউন্ট তৈরীর কাজ সামনের দিকে এগোবে না।

নাম্বারটি যথাযথভাবে দেয়ার পরে অ্যাপসটির শেষ ভাগে পরবর্তী নামের যে বাটন রয়েছে সে বাটন এর উপরে ক্লিক করুন।

 

এর পরবর্তী অপশনে আপনি যে সিম দিয়ে একাউন্ট তৈরি করতে চাইছেন, সেটি কোন অপারেটরের সিম গ্রামীন, বাংলালিংক, রবি ইত্যাদি কিনা সেটি সিলেক্ট করে নিন, তাহলে পরবর্তী পেজে যাওয়ার পারমিশন দেয়া হবে।

যখনই সিম সিলেকশন শেষ হয়ে যাবে, তখনি আপনার সিম নাম্বার একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে। নাম্বারটি যদি আপনার ফোনে যুক্ত করা থাকে তাহলে অটোমেটিকলি ভেরিফিকেশন কোড ফিলাপ হয়ে যাবে।

বিকাশ যদি আপনার কাছ থেকে কোনো রকমের পারমিশন চায় তাহলে Allow বাটনে ক্লিক করে নিন। তাহলেই কোড এর দ্বারা বক্সটি ফিলাপ হয়ে যাবে এবং পরবর্তী পেজে আপনাকে নিয়ে যাওয়া হবে।

এলাও বাটনে ক্লিক করে দেয়ার পরে আবার কনফার্ম নামের যে বাটন রয়েছে সেই কনফির্ম বাটনে ক্লিক করে ভেরিফিকেশনের কাজ সম্পন্ন করে নিন।

এবার আপনার সামনে বিকাশ টার্মস এন্ড কন্ডিশন এর যে সমস্ত নিয়ম নীতি রয়েছে সে সমস্ত নিয়ম নীতির একটি পেজ ওপেন হবে।

আপনার উচিত হবে এই নিয়ম-নীতির পেইজটি ভালোভাবে পড়ে নেয়া এবং তারপরে নিয়ম ও শর্ত সমূহ সম্মত আছি, নামে নিচের দিকে যে বাটন রয়েছে তাতে ক্লিক করা।

বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম | Bkash Account Registration

যখনই আপনি তাদের নিয়ম নীতি সম্পর্কে একাগ্রতা পোষণ করবেন, তখন আপনাকে প্রধান স্টেপে নিয়ে যাওয়া হবে।

এই স্টেপ গুলো হলোঃ 

  • আপনার এনআইডি কার্ডের ছবি তোলা।
  • আপনার ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান ।
  • নিজের ছবি তোলা।

মূলত যখনই আপনি এই ৩ টি স্টেপ যথাযথভাবে পরিপূর্ণ করে নিবেন, তখন আপনার বিকাশ একাউন্ট তৈরীর কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। এবার তাহলে দেখে নেয়া যাক এই স্টেপ গুলো কিভাবে পূর্ণ করবেন।

পরবর্তী পেজে যাওয়ার পরে NID এর ছবি তুলুন নামে যে বাটন রয়েছে, তার উপরে উপরে ক্লিক করুন।

প্রথম স্টেপ এ অর্থাৎ এনআইডি কার্ডের ছবি তোলার জন্য প্রথমত এনআইডি কার্ড আপনার হাতে নিন এবং তারপরে এনআইডি কার্ডের সামনের দিকে ছবি তুলুন পুনরায় পিছনের দিকের ছবি তুলুন।

বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম | Bkash Account Registration

যখনই এনআইডি কার্ডের সামনের এবং পেছনের দিকের ছবি তোলা কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে, তখন কার্ডটি তাদের কাছে সাবমিট করুন।

এর পরবর্তী পেজে মূলত আপনার একাউন্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন ইনফরমেশন দেওয়ার প্রয়োজন হবে, আপনি লক্ষ্য করবেন আপনার আইডি কার্ডের যে তথ্য রয়েছে সেই তথ্য অনুযায়ী সমস্ত ডিটেলস ফিলাপ হয়ে গেছে।

তবে নতুন করে আপনাকে আপনার পেশা এবং আয়ের এর উৎস সম্পর্কে তাদেরকে একটি ধারণা দিতে হবে। এই অপশনগুলোর মধ্যেই আপনি ব্যক্তিগত তথ্য দেয়ার অপশন পেয়ে যাবেন।

ব্যক্তিগত তথ্য দেয়া সম্পন্ন হয়ে গেলে, এবার একদম সর্বশেষ অর্থাৎ আপনার মুখের একটি ক্লিয়ার ছবি তুলে দিতে হবে।

যার এনআইডি কার্ড এর মাধ্যমে আপনি বিকাশ একাউন্ট তৈরি করছেন ওই ব্যক্তির একটি ছবি তুলতে হবে। ছবি তোলার সময় চোখের পাতা নাড়ুন তাহলে ছবি সাবমিট হয়ে যাবে।

এবার আপনার বিকাশ একাউন্ট তৈরি করার সময় যে এনআইডি কার্ড দিয়েছিলেন সে এনআইডি কার্ডের তথ্য এবং আপনার ছবি যদি যথাযথভাবে মিলে যায়, তাহলে পরবর্তী এসএমএসের মাধ্যমে একাউন্ট তৈরির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানিয়ে দেয়া হবে।

যদি আপনার একাউন্ট তৈরীর কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়ে যায়, তাহলে বিকাশ কর্তৃক আপনার সিম নাম্বার একটি এসএমএস প্রেরণ করা হবে। সে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে আপনার অ্যাকাউন্ট তৈরি কাজ সফল হয়েছে কিনা।

যদি আপনার দেয়া ইনফর্মেশন সঠিক থেকে থাকে এবং আপনি যদি বিকাশের যে প্রাইভেসি পলিসি রয়েছে, সেই প্রাইভেসি পলিসি সম্পর্কে সম্মত হয়ে থাকেন তাহলে ফিরতি এসএমএস এর মাধ্যমে আপনার একাউন্ট এক্টিভেট হয়ে যাবে।

যদি ফিরতি এসএমএসের মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হয় যে আপনার অ্যাকাউন্ট সাকসেসফুল ভাবে তৈরি করা হয়ে গেছে, তাহলে এবার আপনার একাউন্টে পিন সেটআপ করার পালা।

বিকাশ পিন সেটাপের নিয়ম

আপনি চাইলে আপনার ফোন থেকে ইউএসএসডি কোড ডায়াল করে বিকাশ একাউন্টের পিন সেট আপ করে নিতে পারবেন।

বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম জানার পরে বিকাশ একাউন্ট কিভাবে তৈরি হওয়ার পর পিন সেটআপ করার জন্য যে ইউএসএসডি কোড ডায়াল করতে হবে সেটি হল *247#

এই ইউএসএসডি কোড ডায়াল করে নেয়ার পরে আপনি নতুন পিন দিয়ে তারপরে আবার পিন দেয়ার মাধ্যমে কনফার্ম করে বিকাশ একাউন্ট যথাযথভাবে তৈরি করতে পারবেন।

এছাড়াও এপস এর মাধ্যমে আপনি চাইলে খুব সহজে বিকাশ একাউন্টের পিন সেট আপ করে নিতে পারবেন। অ্যাপসের মাধ্যমে পিন সেটাপ করার জন্য পুনরায় বিকাশ এপস টিতে প্রবেশ করুন।

যখনই বিকাশ এপস এ প্রবেশ করে নিবেন তখন পুনরায় যে নাম্বার দিয়ে আপনি বিকাশ একাউন্ট তৈরি করেছিলেন, সেই নাম্বার দেয়ার পরে ভেরিফিকেশন কোড আসার পরে নতুন পিন সেটআপ করে নিন।

আর উপরে উল্লেখিত উপায়ে আপনি চাইলে খুব সহজেই বিকাশ পিন সেটআপ করার কাজ সম্পন্ন করে নিতে পারবেন। এবার তাহলে জেনে নেয়া যাক বিকাশ পিন সেটআপ করার নিয়ম।

বিকাশ পিন সেটআপ করতে বর্জনীয় কাজ

আপনি যদি পিন সেটআপ করার ক্ষেত্রে ভুল নিয়ম অনুসরণ করেন কিংবা ভুল পিন সিলেক্ট করে নেন, তাহলে আপনার বিকাশ একাউন্ট ক্ষতিকর অবস্থায় থাকবে।

  • সেজন্য বিকাশ পিন সেটআপ করার সময় নিম্নলিখিত নিয়মগুলো মেনে চলুন।
  • কোন ধারাবাহিক সংখ্যার সিরিজ ব্যবহার করা যাবে না। যেমনঃ 12345
  • এছাড়াও একই সংখ্যার সিরিয়াল ব্যবহার করা যাবে না। যেমনঃ 1111
  • 0 দিয়ে শুরু হওয়া কোন সংখ্যা নয়।
  • আপনি আগে যে সমস্ত একাউন্টে পিন সেট আপ করেছিলেন, সেই একই সমস্ত পিন নাম্বার নয়।

মূলত বিকাশ পিন সেটআপ করার সময় উপরে উল্লেখিত নিয়মগুলো মেনে একটি স্ট্রং ৫ শব্দের পাসওয়ার্ড সিলেক্ট করে নিবেন, যাতে করে একাউন্ট ঝুঁকির মধ্যে না পড়ে।

আর এটিই হলো মূলত ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

এবার আপনি যদি বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিতে চান, তাহলে নিম্নলিখিত ধাপগুলো মেনে চলুন।

বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম

আপনি যদি নিজে থেকে বিকাশ একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে যান কিংবা নিজে থেকে বিকাশ একাউন্ট খোলার পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নেয়ার পরেও খুলতে না পারেন, তাহলে বিকাশ এজেন্টের সহায়তা নিতে পারেন।

বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য প্রথমত যে সমস্ত ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে সেগুলো নিচে দেয়া হল।

  • আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
  • নিজের ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • সিম নাম্বার যা দিয়ে বিকাশ একাউন্ট তৈরি করা হয়নি।
  • একটি মোবাইল ফোন।

উপরে উল্লেখিত ডকুমেন্টস নিয়ে আপনি যদি বিকাশ এর যেকোন এজেন্ট এ চলে যান, তাহলে বিকাশ একাউন্ট তৈরীর কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।

এছাড়াও বিকাশ একাউন্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনি চাইলে আরো বিভিন্ন লোকেশনে গিয়ে একাউন্ট তৈরীর কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন।

যে সমস্ত লোকেশনে গিয়ে আপনি বিকাশ একাউন্ট খোলার কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন, সেগুলো নাম কিংবা লোকেশন নিচে মেনশন করা হলো।

  • গ্রাহক সেবা।
  • ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন পয়েন্টে।
  • ক্যাশ একাউন্ট খোলাগ্রাহক সেবা কেন্দ্রে।

বিকাশ এজেন্ট অ্যাপস ছাড়াও আপনি চাইলে উপরে উল্লেখিত তিনটি মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট তৈরি করার কাজ সম্পন্ন করে নিতে পারবেন।

কিভাবে বিকাশ একাউন্ট তৈরি করা যায় এই সম্পর্কে বিস্তারিত উপরে আলোচনা করা হল।

আশা করি, আপনি বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিতে পেরেছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top